কোথাও কেউ নেই

Program
Category: TV Fiction
Genre: Comedy,Drama
Performer: আসাদুজ্জামান নূর,সুবর্ণা মোস্তফা,লাকী ইনাম,আফসানা মিমি,মাহফুজ আহমেদ,শীলা আহমেদ
Wikipedia: Click here to visit

কোথাও কেউ নেই জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক হুমায়ন আহমেদের রচিত ৯০ দশকের সবচেয়ে জনপ্রিয় ধারাবাহিক নাটক। একই নাম লেখকের একটি উপন্যাসও রয়েছে। 

পরিচালক বরকতুল্লাহর নিৰ্দেশনায় বিটিভির জন্য ধারাবাহিকটি তৈরী হয় ১৯৯২-৯৩ সালে। এই ধারাবাহিকের অন্যতম চরিত্র বাকের ভাই এখনো মানুষের মুখে মুখে।   

বাকের ভাই গুন্ডা প্রকৃতির লোক এবং তার সঙ্গী ছিল \"বদি\" আর \"মজনু\", তারা তিনজনই মোটর সাইকেলে করে চলাফেরা করতো। অধিকাংশ সময় মোটর সাইকেল চালাতো মজনু, বদি বসতো পিছনে, বাকের ভাই বসতো মাঝে। বাকের ভাইয়ের একটা মুদ্রাদোষ ছিল, সে একটা চেইন হাতের তর্জনিতে অনবরত ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে প্যাঁচাতো, আবার উল্টোদিকে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে প্যাঁচ খুলে আবার প্যাঁচাতো। সক্রিয় ডায়লগ না থাকলে প্রায়ই তাকে এরকম করতে দেখা যেত। আর এই বাকের ভাই চরিত্রে অভিনয় করেছেন আসাদুজ্জামান নূর। যদি চরিত্রে অভিনয় করেন আবদুল কাদের আর মজনু হলেন লুৎফর রহমান জর্জ।

বাকের ভাইকে পছন্দ করতো \"মুনা\"। মুনা এক নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে। সে চাকরি করে, এবং তার মামাতো ভাই-বোনদের দেখাশোনা করে। আর এই মুনা চরিত্রে অভিনয় করেন সুবর্ণা মোস্তফা। 

বাকের ভাই এলাকার মাস্তান হলেও অধিকাংশ মানুষ তাকে ভালোবাসতো, কারণ সে ছিল সত্যের পূজারী— নিপীড়িত মানুষের পাশে গিয়ে দাঁড়াতে যেমন কুন্ঠিত হতো না, তেমনি সমাজের অন্যায়কেও মুখ বুজে মেনে নিত না, নিজের গুন্ডাদের দিয়ে তা কঠোর হস্তে দমন করতো। ঘটনাপ্রবাহে বাকের ভাই রেবেকা হক নামের এলাকার প্রভাবশালী এক নারীর সাথে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ে। ঐ নারী তার বাড়িতে অবৈধ কার্যকলাপে লিপ্ত ছিলেন, বাকের ভাই তা জানতে পেরে প্রতিবাদ করে। এই প্রভাবশালী নারী তার বাড়িতে কুকুর পালন করতেন বলে বাকের ভাই তাকে কুত্তাওয়ালী বলেন। 

এরই মধ্যে রাতের অন্ধকারে \"কুত্তাওয়ালীর\" দারোয়ান তার বাড়িতে খুন হয়। ফাঁসানোর জন্য এই খুনের দায় দেয়া হয় বাকের ভাইকে, সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেয় কুত্তাওয়ালী\'র সাজানো সাক্ষী এলাকার নব্য ছিনতাইকারী মতি। যদিও পদে পদে মতির মিথ্যা সাক্ষ্য বাকের ভাইয়ের উকিল ধরিয়ে দিচ্ছিলেন আদালতের কাছে, কিন্তু এদিকে বাকের ভাইকে ফাঁসানোর জন্য কুত্তাওয়ালী লোভ দেখিয়ে বাকের ভাইয়েরই সাগরেদ বদিকে হাত করে নেয়। বদি, নিরুপায় হয়ে আদালতে শপথ করে মিথ্যা সাক্ষ্য দিয়ে বাকের ভাইকে পাকাপোক্তভাবে ফাঁসিয়ে দেয়। 

আদালত, ঐ খুনের দায়ে নির্দোষ বাকের ভাইকে মিথ্যা সাক্ষ্যের ভিত্তিতে মৃত্যুদণ্ড দেন। বাকের ভাইয়ের পক্ষে উকিল হিসেবে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত চেষ্টা চালিয়েও ব্যর্থ হোন উকিল। 

আদালতের এই সিদ্ধান্তে যেন মরে যায় মুনার মন। এদিকে মুনার ঘরের সবাইও বিভিন্ন জায়গায় পাড়ি জমান। এই একাকিত্বের দিনে এক ভোরে, আদো-অন্ধকারে, চারদিকে যখন ফযরের আযান হচ্ছিল, জেল গেট দিয়ে বাকের ভাইয়ের লাশ বের করে দেয়া হয়। কেউ ছিল না সেই লাশ গ্রহণ করার জন্য মুনা ছাড়া। সৎকার করার পর, মুনা বড় একা হয়ে যায়। তার যেন আর কেউ রইলো না কোথাও। নাটকের নামকে সার্থক করে মুনা ধারাবাহিকের শেষ দৃশ্যে ভোরের আলো-অন্ধকারে ছায়া হয়ে একা প্রান্তরে দাঁড়িয়ে থাকে। নাটক টি অনেক ভালো ছিলো ও কালজয়ী বাংলা নাটকের একটি

নাটকের নামকে সার্থক করে মুনা ধারাবাহিকের শেষ দৃশ্যে ভোরের আধো-অন্ধকারে ছায়া হয়ে একা প্রান্তরে দাঁড়িয়ে থাকে।

এ নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন সুবর্ণা মোস্তফা– মুনা, আসাদুজ্জামান নূর– বাকের ভাই, আবদুল কাদের– বদি, লুতফর রহমান জর্জ– মজনু, মাহফুজ আহমেদ– মতি, আফসানা মিমি– বকুল, হুমায়ূন ফরিদী– উকিল। এছাড়া মোজাম্মেল হোসেন, সালেহ আহমেদ, আবুল খায়ের, নাজমা আনোয়ার, শহীদুজ্জামান সেলিম প্রমুখ।

কোথাও কেউ নেই