হুমায়ূন ফরীদি

Artist
Gender: Male
Profession: Actor
Dob: 1952-05-29
Age: 72
Birthplace: Dhaka
Marital Status: Divorced
Spouse: Suborna Mustafa
Religion: Islam
Eye Color: Black
Hair Color: Black
Wikipedia: Click here to visit

হুমায়ূন ফরীদি বাংলাদেশের একজন শক্তিমান অভিনেতা। তিনি টিভি মঞ্চ ও চলচ্চিত্রে অভিনয় করে খ্যাতি অর্জন করেন। 

হুমায়ূন ফরীদির জন্ম ১৯৫২ সালে ঢাকার নারিন্দাতে। তার বাবার নাম এটিএম নূরুল ইসলাম ও মা বেগম ফরিদা ইসলাম। বাবা মায়ের চার সন্তানের মধ্যে তিনি দ্বিতীয় সন্তান। 

তিনি ১৯৬৫ সালে পিতার চাকুরীর সুবাদে মাদারীপুরের ইউনাইটেড ইসলামিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। এ সময় মাদারীপুর থেকেই নাট্য জগতে প্রবেশ করেন। নাট্যগোষ্ঠী নামের একটি সংগঠনের সাথে যুক্ত হয়ে কল্যাণ মিত্রের \'ত্রিরত্ন\' নাটকে \'রত্ন\' চরিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে তিনি সর্বপ্রথম দর্শকদের সামনে আত্মপ্রকাশ করেন। এরপর এই সংগঠনের সদস্য হয়ে \'টাকা আনা পাই\', \'দায়ী কে\', \'সমাপ্তি\', \'অবিচার\'সহ ৬টি মঞ্চ নাটকে অংশ নেন।

১৯৬৮ সালে মাধ্যমিক স্তর উত্তীর্ণের পর পিতার চাকুরীর সুবাদে চাঁদপুর সরকারি কলেজে পড়াশোনা করেন। উচ্চ মাধ্যমিক শেষে ওই বছরেই তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জৈব-রসায়ন বিভাগে ভর্তি হন। যদিও ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যায় এবং শিক্ষা অসমাপ্ত রেখেই মুক্তিযুদ্ধে তিনি সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। যুদ্ধের পর ফিরে এসে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে অর্থনীতি বিষয়ে স্নাতক (সম্মান), স্নাতকোত্তর ডিগ্রী লাভ করেন। তিনি আল-বেরুনী হলের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে তিনি বিশিষ্ট নাট্যকার সেলিম আল-দীনের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রেখেছিলেন।

১৯৭৬ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত নাট্য উৎসবে তিনি অন্যতম সংগঠক ছিলেন। মূলতঃ এ উৎসবের মাধ্যমেই তিনি নাট্যাঙ্গনে পরিচিত মুখ হয়ে উঠেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবস্থাতেই তিনি ঢাকা থিয়েটারের সদস্যপদ লাভ করেন।

ফরীদি ১৯৮৪ সালে তানভীর মোকাম্মেলের হুলিয়া স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রে তার অভিষেক ঘটে শেখ নিয়ামত আলীর দহন (১৯৮৫) চলচ্চিত্র দিয়ে। এই চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে বাচসাস পুরস্কার অর্জন করেন। তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রচারিত বিখ্যাত সংশপ্তক নাটকে \'কানকাটা রমজান\' চরিত্রে অভিনয়ের জন্য বিখ্যাত হয়েছিলেন।

২০০৪ সালে ফরীদি দুটি মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন, সেগুলো হল হুমায়ূন আহমেদের শ্যামল ছায়া ও তৌকীর আহমেদের জয়যাত্রা চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। এই বছর তিনি মাতৃত্ব চলচ্চিত্রে অভিনয় করে শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন।

দারুণ বুদ্ধিদীপ্ত ও রোমান্টিক এ মানুষটি ব্যক্তিগত জীবনে প্রথমে বেলি ফুলের মালা দিয়ে ফরিদপুরের মেয়ে মিনুকে বিয়ে করেন। তখন এ বিয়ে সারা দেশে ব্যাপক আলোড়ন তোলে। এ ঘরে তাদের একটি কন্যাসন্তান রয়েছে। নাম দেবযানি। পরে তিনি ঘর বাঁধেন প্রখ্যাত অভিনেত্রী সুবর্ণা মুস্তাফার সঙ্গে। কিন্তু ২০০৮ সালে তাদের বিচ্ছেদ হয়ে যায়।

তিনি ২০১২ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকার ধানমন্ডিতে তার নিজ বাড়িতে মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬০ বছর। এর পূর্বে তার রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমে যাওয়ায় তাকে ঢাকার মডার্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরে আসার পর তিনি ১৩ ফেব্রুয়ারি বাথরুমে পড়ে গিয়ে মাথায় আঘাত পান। এই আঘাতেই তার মৃত্যু হয়।

হুমায়ূন ফরীদি